চিনি কোনো না কোনো ভাবে প্রতিদিন আমাদের খাদ্য তালিকায় থাকে। আর আমাদের বাঙালীদের তো মুড়ি, রুটি যাই খাই না কেনো কিছু না থাকলে শুধু চিনি দিয়েই মুড়ি, রুটি খেয়ে নি। তাছাড়া রান্নাতেও চিনির ব্যবহার তো আছেই। আচ্ছা আপনারা কি কোনো দিন ভেবে দেখেছেন যে চিনি আমিষ না নিরামিষ? যাহ্, এটা কোন কথা হলো? চিনি তো নিরামিষ। এটাই জানেন সবাই। তাই না?
আমরা যখন বাজারে চিনি কিনতে যাই তখন বেশির ভাগ মানুষই দোকানের ওই খোলা চিনি অর্থাৎ চিনি বস্তা থেকে দোকানদার আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী চিনি মেপে দেন। আচ্ছা, আপনারা কি কখনও বস্তার ওপর কি লেখা আছে সেটা দেখে কি চিনি কেনেন? না, কেউই করেন না এটা। আমরা তো দোকানদারকে বললে সে প্রায় ধবধবে সাদা, সুন্দর দেখতে চিনি প্যাকেট করে আমাদের দিয়ে দেয় আর আমরা সেটাই বাড়ি নিয়ে আসি। আর আমরা ভাবি চিনি যত ধবধবে হবে ততোই উন্নত মানের চিনি। এই চিনির সাদা ধবধবে রঙের পেছনেই লুকিয়ে আছে আসল রহস্য।
আমরা সাধারনত জানি আখের রস থেকে চিনি তৈরি হয়। কিন্তু আমরা প্রায় সবাই চিনি প্রস্তুতি প্রণালী জানি না।
আখের রস থেকে এই ধবধবে সাদা চিনি – চিনি তৈরির প্রণালীর মধ্যে অনেকবার ‘রিফাইনিং প্রসেস’ -এর প্রয়োজন হয়, যার জন্যেই চিনির রঙ এত সাদা ধবধবে হয়। আর এই ‘রিফাইনিং প্রসেস’ এর জন্যে দরকার হয় কার্বন ফিল্টারের। আর এই কার্বন ফিল্টার হিসেবে যা ব্যবহার হয় তা শুনলে চমকে উঠবেন।
কার্বন ফিল্টার হিসেবে ব্যবহার হয় বিভিন্ন প্রাণীর হাড় পুড়িয়ে পাওয়া কয়লা বিশেষ (Bone char)। সুতরাং আপনারা ভেবে দেখুন যে এবার চিনিকে কি বলবেন? আমিষ নাকি নিরামিষ।
অনেকেই এটা জানার পর হয়তো ভাববেন যে তাহলে চিনির জায়গায় কি ব্যবহার করবেন? তাদের জন্যে জানিয়ে রাখি, বাজারে এখন অরগানিক সুগার, বিট সুগার ও আনরিফাইন্ড সুগার পাওয়া যাচ্ছে যাতে কিন্তু এই Bone Char ব্যবহার হয় না। আর সবচেয়ে ভালো হয় যদি চিনির পরিবর্তে গুড়ের ব্যবহার করেন। আর পরিশেষে বলে রাখি যদি প্যাকেটজাত চিনি কেনেন, তাহলে প্যাকেটের ওপর দেখে নেবেন যে ওপরে ‘Vegan’ বা ‘ Bone char free’ লেখা আছে কিনা।
বিস্তারিত জানতে নিচের ভিডিওটি দেখুন।